সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিতে আজ রোববার সারা দেশে গুরুত্বপূর্ণ মোড় ব্লক করার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধকালে আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান এই ঘোষণা দেন। এরপর শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় ছেড়ে চলে যান। অবরোধের সমাপনী বক্তব্যে নাহিদ হাসান বলেন, আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আপনারা আমাদের বাধা দেবেন না। বাধা দিলে তা ভালো হবে না। আমাদের চাকরি না থাকলে আপনাদের চাকরিও থাকবে না। আমরা অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানাই, এই আন্দোলন শুধু আমাদের আন্দোলন না, এই আন্দোলন আপনাদেরও আন্দোলন। আপনাদের সন্তান চাকরি না পেলে আপনাদেরও ভোগান্তি হবে। তাই আমাদের আন্দোলনে আপনারা সহযোগিতা করুন। আন্দোলনের সমাপ্তি টেনে নাহিদ হাসান বলেন, আগামীকাল (রোববার) বিকাল ৩টা থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। রোববার সারা দেশে প্রতিটি মোড়, প্রতিটি সিগনাল ব্লক করা হবে। সারা দেশের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি ব্লকড কর্মসূচি পালন করার আহ্বান জানান।
এরআগে গতকাল শনিবার বিকেলে আবারও রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। এর ফলে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রভাবে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। বেলা সোয়া তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের শ্যাডো ও মল চত্বর ঘুরে মাস্টারদা সূর্যসেন হল ও হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের সামনে দিয়ে স্মৃতি চিরন্তন চত্বর, টিএসসি ও বকশীবাজার হয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে পলাশী ও আজিমপুর এলাকা ঘুরে আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে শাহবাগে আসে। মিছিলটি শাহবাগে আসার আগেই জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য অবস্থান করছিলেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের একটি অংশও জাদুঘরের সামনের সড়কে মিছিলটি আসার জন্য অপেক্ষা করছিল কিন্তু মিছিলটি চারুকলা অনুষদের সামনে আসতেই অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীরা বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।
এর ঠিক আগেই পুলিশ সদস্যরা শাহবাগের সড়কে অবস্থান নেন। তবে তারা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বাধা দেননি। মিনিট পাঁচেকের মধ্যে মূল মিছিলটি শাহবাগ মোড়ে অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেয়। বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে শাহবাগ মোড়ের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘তারুণ্যের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’ প্রভৃতি বলে স্লোগান দেন। এসময় রাস্তার এক পাশে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান করেন। অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড় দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে ঢাবির বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আজও হল থেকে বের হওয়ার সময় বাধা দেয় ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের বাধার পরেও যোগ দেয় শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাস্টারদা সূর্যসেন হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বাধা দিলেও শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে তারা কিছু বলতে সাহস পায়নি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, বিজয় একাত্তর হল, অমর একুশে হল, স্যার এ এফ রহমান হলেও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠে। আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশাল মিছিল নিয়ে আমরা বুয়েট, ইডেন কলেজ, হোম ইকোনমিকস কলেজ ঘুরে শিক্ষার্থীদের নিয়ে শাহবাগে জড়ো হয়েছি। আমাদের দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবেই।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের পাশাপাশি আরও তিনটি দাবি জানাচ্ছেন। এগুলো হলো ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে, সে ক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী শুধু অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে; সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা-সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না ও কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে; এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিকে আজ রোববার সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘট পালনের আগাম ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এই কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৬৩টি বিভাগ-ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা এক শিক্ষার্থী জানান, আজকের কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজসহ ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চলতে থাকবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় ছাত্র আন্দোলন হয়। আন্দোলন থেকে সংস্কারের দাবি উঠলেও ওই বছরের ৪ অক্টোবর সব ধরনের কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর ফলে সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে গত ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশটি অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। এর পর থেকেই চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা মাঠে নামেন। রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। পবিত্র ঈদুল আজহার আগে কয়েক দিন বিক্ষোভের পর ১০ জুন দাবি মানতে সরকারকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণ না হওয়ায় ১ জুলাই থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা টানা আন্দোলন করছেন।
রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়
রাবি রিপোর্টার: সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির সংস্কার ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনের দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা প্যারিস রোডের সামনে এসে জড়ো হন। পরে বেলা ১১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ এসব স্লোগান দিতে থাকেন। আন্দোলনের প্রধান সংগঠক আমানুল্লাহ আমান বলেন, সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে এক হয়ে আমাদের আন্দোলন ধারাবাহিকভাবে চলবে। সামনে আমরা আরও কর্মসূচি পালন করবো। এদিকে, গতরাত থেকে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, সমাজকর্ম ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, আইন বিভাগসহ বেশ কিছু বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আরো অনেক বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে আলোচনা করছেন বলে জানা গেছে।
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
রংপুর অফিস: বৈষম্যমূলক কোটা বাতিলের দাবিতে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে নগরীর মডার্ন মোড়ে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও ছাত্রসমাবেশ করেন তারা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী যান চলাচল বিঘিœত হয়। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে পদযাত্রা ও ছাত্রসমাবেশ করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি আদায়ে এ সময় মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যান চলাচলে বিঘেœর সৃষ্টি হয়। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে একটি পদযাত্রা বের করা হয়। ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মডার্ন মোড়ে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে।
এসময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শ্লোগান দেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, এই বৈষম্যমূলক কোটা প্রথার কারণে মেধাবীরা সঠিক মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কোনো মেধাবী শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ৮০ পেয়েও চাকরি পাবে না, আর কোটাধারীরা সহজেই চাকরি পাবে। এই বৈষম্য সংবিধান পরিপন্থী। মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলে-মেয়ে পর্যন্ত কোটা ঠিক ছিল। নাতি-নাতনি বিষয়টা অযৌক্তিক। এক শতাংশ প্রতিবন্ধী বাদে সব কোটা বাতিল করতে হবে। কোটা বহাল থাকলে দেশের মেধাবীরা দেশে চাকরি না পেয়ে বিদেশে পাড়ি জমাবে। দেশে সরকারি চাকরি করার আগ্রহ হারাবে। দেশ আরও পিছিয়ে পড়বে। এসময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রংপুর তাজহাট থানা মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীরা রাস্তায় বিক্ষোভ করেছিলেন কিছু সময়ের জন্য।
চট্টগ্রামে সড়ক অবরোধ
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টানা দ্বিতীয় দিনের মতো কোটা সংস্কারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন। গতকাল শনিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ষোলশহর রেলওয়ে স্টেশন থেকে গিয়ে নগরীর দুই নম্বর গেইটের গোলচত্বরে অবস্থান নিয়েছেন। এসময় দাবি না মানলে আন্দোলন জোরালো করার হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন তারা। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে; ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে, তবে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে কোটা রাখা যেতে পারে; সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না; কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে; দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটলে করে শিক্ষার্থীরা ষোলশহর নামেন। সেখান থেকেই কোটা সংস্কারের দাবি তুলে তারা বিভিন্নরকম স্লোগান দিতে দিতে সড়কের নেমে আসে। পুলিশ একপর্যায়ে তাদেরকে স্টেশন থেকে সড়কে নামতে না দিলে তারা পুলিশের বাধা ভেঙে সড়কে নেমে আসেন।
শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের ফলে বন্ধ হয়ে যায় সড়কে এক পাশের যান চলাচল। নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় তখন বাড়ে যানজট। তবে, যেকোনো বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থানও দেখা গেছে।
সিলেটে শাবি শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
সিলেট ব্যুরো: সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল ও ২০১৮ সালে জারিকৃত পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে তারা সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় সড়কের দুপাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে মূল ফটকে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। কোটা না মেধা? মেধা মেধা, আপস না সংগ্রাম? সংগ্রাম সংগ্রাম, দালালি না রাজপথ? রাজপথ রাজপথ, সারা বাংলায় খবর দে কোটা প্রথার কবর দে, মেধা হত্যার অপর নাম কোটা প্রথার জয়গান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোটা প্রথা মানেনা এরকম নানা স্লোগানে স্লোগানে বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল রেখে কোটা বাতিলের দাবি জানান। ঘন্টাখানেক সড়ক অবরোধ শেষে তারা আবার ক্যাম্পাসে ফিরে যান।