বরগুনার আমতলীতে একটি লোহার সেতু ভেঙে ৯ জনের মৃত্যুর ঘটনায় বর ডা. সোহাগ ও কনে হুমায়রার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আকস্মিক ওই দুর্ঘটনায় বর ও কনের বাড়িতে চলছে আহাজারি ও কান্নার রোল।
জানা গেছে, উপজেলা চওড়া ইউনিয়নের কাউনিয়া ইব্রাহিম একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হলদিয়া ইউনিয়নের গুরুদল গ্রামের মাসুম বিল্লাহ মনিরের মেয়ে হুমায়রার সঙ্গে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমতলী পৌর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ড খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা সেলিম মাহমুদের ছেলে ডা. সোহাগের বিয়ে হয়।
গত শুক্রবার (২১ জুন) কনে হুমায়রাকে বর ডা. সোহাগের বাড়িতে তুলে দেওয়া হয়।
পরের দিন শনিবার কনে পক্ষের লোকজন বরের বাড়িতে বৌভাতে অংশ নিতে একটি মাইক্রোবাস ও ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকে চেপে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হলদিয়া হাট সংলগ্ন লোহার সেতুটি পাড় হওয়ার সময় মাইক্রোবাস ও ইজিবাইকসহ সেতুর মাঝের অংশ ভেঙে কচুরিপানায় ভর্তি চাওড়া নদীতে পড়ে যায়। ওই সময় ইজিবাইকে থাকা সকল যাত্রীরা সাঁতরে নদীর তীরে উঠতে পারলেও মাইক্রোবাসটি যাত্রী নিয়ে নদীর পানিতে তলিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা ওই মাইক্রোবাসে থাকা যাত্রীদের উদ্ধারের চেষ্টা চালায় কিন্তু ততক্ষণে মাইক্রোবাসে থাকা কনে পক্ষের ৯ যাত্রী শিশু রুকাইয়াত ইসলাম (৪), ঋধি (৪), তাহিয়া মেহজাবিন আজাদসহ (৭) অপর যাত্রী তাসফিয়া (১৪), রাইতি (২২), জাকিয়া (৩৫), শাহনাজ আক্তার রুবি বেগম (৩৫), রুবিয়া (৪৫) ও ফাতেমা (৫৫) নিহত হয়।
এদের মধ্যে রুকাইয়াত ইসলাম ও জাকিয়ার বাড়ি আমতলী উপজেলার গুরুদল গ্রামে। অপর নিহত ৭ জনের বাড়ি মাদারিপুর জেলার শিবচর উপজেলার কোকরার চর গ্রামে বলে জানা গেছে। তারা সকলে কনে হুমায়রার মামা বাড়ির আত্মীয়-স্বজন ও একই পরিবারের লোক।
বরের বাবা শিক্ষক সেলিম মাহমুদ বলেন, ‘এমন ঘটনায় আমি হতভম্ব।
পাতিল ভরা খাবার পড়ে রয়েছে। দুর্ঘটনায় বউ ভাতের সবকিছু ভেস্তে চলে গেল।’
কনের বাবা শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ মনির বলেন, ‘আমি কি বলব? শ্বশুরবাড়ির মানুষকে আমি কি জবাব দেব? এলো বিয়ের আনন্দ করতে আর চলে গেল কাফনের সাদা কাপড় পড়ে।’
এদিকে রুকাইয়াত ইসলাম ও জাকিয়ার জানাযা শনিবার রাত ১০টায় নিজ বাড়ী আমতলীর গুরুদল গ্রামে অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়েছে। বাকিদের জানাযা আজ রবিবার (২৩ জুন) সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে তাদের বাড়ি মাদারিপুর জেলার শিবচর উপজেলার কোকরার চর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে নিহতের স্বজনরা নিশ্চিত করছেন।
s